ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য


ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারেন এছাড়া আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য শুধুমাত্র একটি পোস্ট থেকে জেনে নিতে পারবেন ।
ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য
ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য

এই আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য করে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না ।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর

আমাদের জাতীয় ইতিহাসের ভাষা আন্দোলন এক অন্যান্য স্থান অধিকার করে রয়েছে। ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে যদি এক অবিভক্ত রাষ্ট্র রূপের স্বাধীনতা লাভ করত তাহলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলা সম্ভবপর হতো না। বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মহাত্মা গান্ধী প্রশ্ন করেছিলেন যদি ভারত স্বরাজ লাভ করে তবে এ দেশের সাধারণ ভাষা কি হবে ? যেভাবে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন হিন্দি।

রবীন্দ্রনাথের এ বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন বিখ্যাত ভাষাবিদ ডঃ মোঃ শহিদুল্লাহ। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন,ভারতবর্ষে তিনটি রাষ্ট্রভাষা হওয়ার যোগ্যতা ও সম্ভাবনা রয়েছে। ভাষা তিনটি হলো বাংলা, উর্দু ও হিন্দি। ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বক্তব্য যে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ছিল তা এখন সুপ্রমানিত। বর্তমানে বাংলাদেশ পাকিস্তান ও ভারতের রাষ্ট্রভাষা যথাক্রমে বাংলা উর্দু ও হিন্দি। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে পৌনে দুইশ বছরের ব্রিটিশ শাসিত ভারত বর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে অবিভক্ত অবয়বে নয়।

১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসের ব্রিটিশ শাসনের অবসানে ভারতবর্ষে প্রথম স্বাধীনতা লাভ করে পৃথক দুটি রাষ্ট্র হিসেবে। একটি ভারত এবং অপরটি পাকিস্তান। ভারতের ভৌগলিক অবস্থান ছিল অখন্ড। অপরপক্ষে পাকিস্তানের অবস্থান ছিল ভারতের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তের দুইটি ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন জনপদে নিয়ে। হাজার মাইলের ও অধিক দূরত্বে অবস্থিত দুটি ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন জনপদ নিয়ে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে নেই।

পাকিস্তান রাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চ, যা পশ্চিম পাকিস্তান নামে পরিচিত, তার চারটি প্রদেশ ছিল পশ্চিমপাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ। আর পূর্বাঞ্চলে একমাত্র প্রদেশ ছিল যার নাম ছিল পূর্ববাংলা। পূর্বাঞ্চলের এই একটি প্রদেশের জনসংখ্যা ছিল পশ্চিম অঞ্চলের চারটি প্রদেশের সর্বমোট জনসংখ্যার চাইতেও অধিক। পূর্ববঙ্গের জনসংখ্যার সবাই ছিল বাংলাভাষী। এই নিরিখে বাংলাকে সমগ্র পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবি তোলা যেতো। অবশ্য তোলা হয়নি। আর জায়গায় ওর থেকে সমগ্র পাকিস্তানে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার একটি গোপন চক্রান্ত শুরু করে। নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের উক্ত পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে উর্দুভাষী অবাঙালিরা।

সাধন ভাষার প্রশ্নের পাকিস্তানের অধিকাংশ জনগণের মাতৃভাষা বাংলাকে বিবেচনায় আনা হয়নি। পূর্ববঙ্গের পূর্ব বাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খাজা নাজিম উদ্দিন। থাকার নবাব পরিবারের সদস্য হিসেবে তার মাতৃভাষা ছিল উর্দু।আমি পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম গভর্নর জেনারেল কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাকে সম্ভবত ধারণা দিয়েছিলেন যে পূর্ববঙ্গের জনগণ সবাই উর্দু বোঝে।

তিনি যদি জিন্নাহ সাহেবকে এই ভুল ধারণা না দিলে তাহলে জিন্নাহ সাহেবের মনে এমন একটা ভুল ধারণা যে পূর্ব পাকিস্তানের সব লোক উর্দু বোঝে। জিনা সাহেব খাজা নাজিমুদ্দিনের কথায় বিশ্বাস করে তার প্রথম পর্ব পাকিস্তান সফরকালের রেসকোর্সএবং কার্জন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশি সমাবর্ষণ উৎসবে উদ্যোগে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ঘোষণা করেন, যার ফলে নতুন করে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়।

খাচা নাসিম উদ্দিনের পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সব আবেদন মেনে নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। যে খাজা নাজিম উদ্দিন ১৯৪৮ সালের জিন্নাহ সাহেবের সন্তুষ্টি পাওয়ার লক্ষ্যে রাষ্ট্রভাষার সংগ্রাম পরিষদের সফল দাবিদার মেনে নিয়ে প্রস্তাবে পক্ষে স্বাক্ষর করেন সেই খাজা নাজিমুদ্দিনীই উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার সংকল্প ঘোষণা করেন। এটার ভাষা সংগ্রাম পরিষদ অমার্জনীয় অপরাধী হিসেবে গণ্য করে এবং তার এই বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিবাদ হিসেবে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী প্রতিবাদ দিবস এবং হরতালের ডাক দেয়।

রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সালাম বরকত রফিক জব্বার প্রমুখ ভাষা শহীদ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিকে অপ্রতিরোধ্য করেন। আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য

১। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন বিশ্বের মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাসে এক অন্যান্য ঘটনা।

২। বাংলাদেশী প্রথম যা ভাষা আন্দোলনের জন্য যুদ্ধ করেছিল।

৩। ভাষা আন্দোলন ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি ও উপনিবেশিক শাসন শোষণের বিরুদ্ধে পূর্ববঙ্গের শোষিত জনগণের সুদীর্ঘ সংগ্রামের সংঘটিত সূচনা।

৪। এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন।

৫। ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় সূচনা ঘটে ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে।

ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ১০ টি বাক্য

১। বাংলা ভাষায় রক্ষার জন্য ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় সংগঠিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন হচ্ছে ভাষা আন্দোলন।

২। ভাষা আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করা।

৩। ১৯৪৮ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র জনতার বিক্ষোভের মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়।

৪। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে রফিক, সালাম, বরকত আব্দুল জব্বার সহ আরো অনেকে নিহত।

৫। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের তীব্রতা বেশি হলেও মূলত ভাষা আন্দোলন ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু হয়েছিল।

৬। ভাষা আন্দোলনের তীব্রতা দেখে ১৯৫৬ সালের ১৫ ই অক্টোবর পাকিস্তান গণপরিষদের বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

৭। বাঙালি জাতি হচ্ছে একমাত্র জাতি যাদেরকে ভাষা রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলনের জীবন দিতে হয়েছে।

৮। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।

৯। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে।

১০। ভাষা আন্দোলনে বাঙ্গালীদের মধ্যে দেশপ্রেম জাতীয়তাবোধ সংগ্রামী চেতনার উন্মেষ ঘটায়।

ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ১৫ টি বাক্য

১। বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় সংঘটিত একটি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন।

২। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্বে পূর্ব বাংলায় মাতৃভাষা বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

৩। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও বস্তুত এর বিস্তৃত হয়েছিল বহু আগে অর্থাৎ ১৯৪৭ সালে।

৪। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তানঅধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

৫। পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ পূর্ব বাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্তান।

৬। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল।

৭। ১৯৪৮ সালের পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলাকে আরবি করনের অংশ হিসেবে বলেন উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।

৮। পূর্ব বাংলার মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।

৯। মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে।

১০। আন্দোলন তেমনি পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

১১। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র প্রগতিশীল এছাড়াও কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।

১২। মিছিলটির ঢাকা মেডিকেলের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গলি বর্ষণ করে।

১৩। পুলিশের গুলিতে নিহত হয় রফিক সালাম বরকত আব্দুর জব্বার সহ আরো অনেকে।

১৪। কোন আন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নদী শিকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হয়।

১৫। ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং সেই সাথে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শেষ কথা: ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য

পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য জানতে পারলেন । মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি আপনার কোন সমস্যা হওয়ার কথা না ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য সম্পর্কে জানতে পারলেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url